নিয়মিত আমন্ড খাওয়ার উপকারিতা জানুন – শরীরের জন্য কতটা ভালো এই বাদাম।
পুষ্টিগুণে ভরপুর আমন্ড স্বাস্থ্যকর জীবনধারা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এতে থাকা প্রোটিন, ফাইবার, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ভিটামিন ও খনিজ উপাদান শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগায়। নিয়মিত আমন্ড খেলে হৃদ্স্বাস্থ্য ভালো থাকে, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে এবং ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
১০০ গ্রাম আমন্ডের পুষ্টিগুণ:
প্রতি ১০০ গ্রাম আমন্ডে রয়েছে প্রায়—
-
২৫৮ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম
৫০৩ মিলিগ্রাম ফসফরাস
-
৫৭ মাইক্রোগ্রাম বায়োটিন
-
২৫৪ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম
-
২১.৪ গ্রাম প্রোটিন
-
৬০০ ক্যালরি
-
১০.৮ গ্রাম ফাইবার
-
৫১.১ গ্রাম ফ্যাট
-
০.৯১ মিলিগ্রাম কপার
নিয়মিত এই বাদাম পরিমিত পরিমাণে খেলে শরীর ও মনের সার্বিক সুস্থতা বজায় রাখা সম্ভব।প্রতিদিন অল্প পরিমাণে আমন্ড খেলে সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত হয় এবং এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই।
ত্বকের যত্নে আমন্ড
প্রাকৃতিকভাবে ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে সাহায্য করে এই বাদাম। এতে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও ভিটামিন-ই ত্বকের বলিরেখা ও দাগ হ্রাস করে। ত্বককে মসৃণ ও উজ্জ্বল রাখতে সহায়তা করে।এ ছাড়া আমন্ডের অন্যান্য পুষ্টি উপাদান ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখে এবং কোষ মেরামতে সাহায্য করে।
হার্টের জন্য উপকারী:
আমন্ডকে প্রায়ই ‘হার্ট-হেলদি’ খাবার বলা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত আমন্ড খেলে শরীরে ভালো কোলেস্টেরল (HDL) বৃদ্ধি পায়, পেটের অতিরিক্ত চর্বি কমে এবং কোমরের মাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। এছাড়া এটি হৃদরোগ প্রতিরোধেও সহায়ক। প্রতিদিন এক মুঠো আমন্ড খাওয়া সুষম খাদ্যাভ্যাসের অংশ হিসেবে দীর্ঘমেয়াদে হার্ট সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে:
টাইপ–২ ডায়াবেটিসের সংখ্যা বর্তমানে দ্রুত বাড়ছে। আমন্ড এতে একটি ভালো বিকল্প হতে পারে। এতে থাকা প্রোটিন ও ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং কার্বোহাইড্রেটসমৃদ্ধ খাবারের গ্লাইসেমিক প্রভাব কমায়। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন আমন্ড খাওয়া শুধু রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণেই নয়, ডায়াবেটিসজনিত জটিলতা প্রতিরোধেও সহায়ক।
যারা ওজন কমাতে চান, তাদের জন্য আমন্ড আদর্শ স্ন্যাকস। এটি খিদে নিয়ন্ত্রণে রাখে, দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে এবং অপ্রয়োজনীয় খাওয়া কমাতে সাহায্য করে। আমন্ডে থাকা প্রোটিন, ফাইবার ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট একসঙ্গে কাজ করে হজম প্রক্রিয়া ধীর করে। খিদের হরমোন নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত রাখে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে
ম্যাগনেসিয়ামের একটি ভালো উৎস হচ্ছে এই বাদাম। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শরীরে ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি থাকলে রক্তচাপ বেড়ে যায়। তাই নিয়মিত আমন্ড খেলে রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত হয়। আমন্ডে থাকা উদ্ভিজ্জ প্রোটিন ও ফাইবার রক্তচাপের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
প্রতিদিন অল্প পরিমাণে আমন্ড খাওয়া শরীরের ভেতর থেকে সুস্থতা এনে দেয়। এটি ত্বক উজ্জ্বল রাখে, হার্টকে সুরক্ষা দেয়, রক্তচাপ ও রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ওজন সঠিক রাখতে সহায়ক। তাই এই পুষ্টিকর বাদামটি অবশ্যই আপনার দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত।

No comments