বিসিবি নির্বাচন: কীভাবে নির্বাচিত হন পরিচালকেরা, কে হন সভাপতি

 

বিসিবি নির্বাচন: কীভাবে নির্বাচিত হন পরিচালকেরা, কে হন সভাপতি

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন প্রতি চার বছর পরপর অনুষ্ঠিত হয়। বোর্ডে মোট ২৫ জন পরিচালক থাকেন, যারা তিনটি ভিন্ন ক্যাটাগরি থেকে নির্বাচিত বা মনোনীত হন।

🔹 পরিচালক সংখ্যা ও ক্যাটাগরি

  • ক্যাটাগরি–১: সাতটি বিভাগীয় ক্রিকেট সংস্থা থেকে ১০ জন পরিচালক নির্বাচিত হন।

    • ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগ থেকে দুজন করে,

    • রাজশাহী, রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগ থেকে একজন করে পরিচালক নির্বাচিত হন।

  • ক্যাটাগরি–২: ঢাকা মহানগরের ক্লাবগুলোর প্রতিনিধিদের মধ্য থেকে ১২ জন পরিচালক নির্বাচিত হন।

  • ক্যাটাগরি–৩: সাবেক অধিনায়ক, ক্রিকেটার ও বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের মধ্য থেকে ১ জন পরিচালক নির্বাচিত হন।
    সব মিলিয়ে নির্বাচনের মাধ্যমে আসেন ২৩ জন পরিচালক, আর ২ জন পরিচালককে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সরাসরি মনোনীত করে।


🔹 ভোটার ও নির্বাচনী প্রক্রিয়া

বিসিবি নির্বাচনে প্রতিটি ক্যাটাগরির ভোটার আলাদা:

ক্যাটাগরি–১:
প্রতিটি জেলা ও বিভাগ থেকে একজন করে কাউন্সিলর ভোট দেন। তাঁদের মনোনয়ন দেন জেলা ও বিভাগীয় প্রশাসক। এবার কাউন্সিলর হওয়ার শর্ত হিসেবে জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটির সদস্য থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
প্রতিটি বিভাগের কাউন্সিলররা শুধু নিজেদের বিভাগের পরিচালকদের ভোট দিতে পারেন—অন্য বিভাগের নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন না।

ক্যাটাগরি–২:
এই ক্যাটাগরির ভোটার হচ্ছেন ঢাকা শহরের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেট লিগে অংশ নেওয়া ক্লাবগুলোর প্রতিনিধিরা। তাঁদের ভোটে নির্বাচিত হন ১২ জন পরিচালক। এবারের নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ছিল ৭৬ জন। তবে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় তৃতীয় বিভাগে জায়গা পাওয়া বিতর্কিত ১৫ ক্লাবের কাউন্সিলরশিপ স্থগিত করেছে হাইকোর্ট।

ক্যাটাগরি–৩:
এই ক্যাটাগরিতে সবচেয়ে বেশি ভোটার—মোট ৪৫ জন। তাঁদের ভোটে নির্বাচিত হন ১ জন পরিচালক। ভোটারদের মধ্যে রয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক ৫ অধিনায়ক, ১০ জন সাবেক ক্রিকেটার, এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা বোর্ড ও সংস্থার প্রতিনিধি।


🔹 বিসিবি সভাপতি নির্বাচন

বিসিবি সভাপতি নির্বাচিত হন পরিচালকদের মধ্য থেকেই। অর্থাৎ নির্বাচিত ২৩ জন ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মনোনীত ২ জন পরিচালকের মধ্য থেকে ভোটের মাধ্যমে একজন সভাপতি হন। সভাপতি হতে হলে অবশ্যই পরিচালকের পদে থাকতে হয়।


🔹 এবারের নির্বাচনের প্রার্থীরা

ক্যাটাগরি–১:
এবার ভোট হবে কেবল ঢাকা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে

  • চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে আহসান ইকবাল চৌধুরী ও আসিফ আকবর,

  • খুলনা থেকে আবদুর রাজ্জাক ও জুলফিকার আলী খান,

  • সিলেট থেকে রাহাত সামস,

  • বরিশাল থেকে শাখাওয়াত হোসেন—এরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

ঢাকা বিভাগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান সভাপতি আমিনুল ইসলাম, ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমূল আবেদীন, এবং জামালপুর জেলার কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদুয়ান
আমিনুল ও নাজমূল সর্বশেষ বোর্ডে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মনোনীত পরিচালক ছিলেন।

রাজশাহী বিভাগে তিন প্রার্থী—হাসিবুল আলম, মুখলেসুর রহমানএস এম শামস মতিন—এর মধ্যে হাসিবুল আলম নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন, তবে ব্যালটে তাঁর নাম থাকবে।

রংপুর বিভাগে লড়ছেন হাসানুজ্জামান, রেহাতুল ইসলামনূর এ শাহাদাৎ স্বপন


ক্যাটাগরি–২:
প্রার্থী ছিলেন ৩২ জন, তবে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালসহ ১৬ জন প্রার্থী বিতর্কিত ক্লাবগুলোর কাউন্সিলরশিপ বাতিলের প্রতিবাদে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। ফলে এখন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৬ জন প্রার্থী, যাদের মধ্যে ১২ জন নির্বাচিত হবেন।

প্রার্থীরা হলেন:
লুতফুর রহমান (লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ), ইসতিয়াক সাদেক (ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাব), আদরান রহমান (রূপগঞ্জ টাইগার্স), ফায়াজুর রহমান (উত্তরা ক্রিকেট ক্লাব), আবুল বাশার (প্রাইম দোলেশ্বর), আমজাদ হোসেন (ঢাকা স্পারটান্স), আহসানুর রহমান মল্লিক (ঢাকা মেরিনার ইয়াংস), মোখছেদুল কামাল (গোল্ডেন ঈগলস), ফায়াজুর রহমান ভুঞা (ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং), নাজমুল ইসলাম (ট্যালেন্ট হান্ট একাডেমি), ফারুক আহমেদ (রেঞ্জার্স একাডেমি), মেজর ইমরোজ আহমেদ (কাঁঠালবাগান গ্রিন ক্রিসেন্ট), রাকীব উদ্দিন (এইস ওয়ারিয়রস), মনজুর আলম (রেগুলার স্পোর্টিং ক্লাব) ও মেহরাব আলম চৌধুরী (যাত্রাবাড়ী ক্রীড়া চক্র)।

লুতফুর রহমান ও মেজর ইমরোজ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন, তবে তাঁদের নামও ব্যালটে থাকবে।


No comments

Powered by Blogger.