স্বেচ্ছায় আয়ারল্যান্ড ছাড়লে নগদ অর্থ পাবেন আশ্রয়প্রার্থীরা

 

স্বেচ্ছায় আয়ারল্যান্ড ছাড়লে নগদ অর্থ পাবেন আশ্রয়প্রার্থীরা

আশ্রয়প্রার্থীদের স্বেচ্ছায় দেশে ফেরাতে নগদ সহায়তা দিচ্ছে আয়ারল্যান্ড

আয়ারল্যান্ড সরকার ঘোষণা দিয়েছে, আশ্রয়প্রার্থীরা যদি স্বেচ্ছায় নিজ দেশে ফিরে যেতে চান, তবে তাদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। এ কর্মসূচির আওতায় কোনো ব্যক্তি নিজ দেশে ফেরত গেলে পাবেন সর্বোচ্চ ২ হাজার ৫০০ ইউরো, আর একটি পরিবার পাবে সর্বোচ্চ ১০ হাজার ইউরো পর্যন্ত নগদ অর্থ।

সরকার বলছে, এই উদ্যোগের মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল ব্যয় কমানো সম্ভব হবে। বর্তমানে আশ্রয়প্রার্থীদের থাকার খরচ, খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও সামাজিক ভাতাসহ গড়ে একজনের পেছনে প্রায় এক লাখ ২২ হাজার ইউরো ব্যয় হয়।

নতুন কর্মসূচির ঘোষণা

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) আয়ারল্যান্ডের বিচার, অভ্যন্তরীণ ও অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী জিম ও’ক্যালাহান নতুন এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন। মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, আশ্রয়ের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর যারা আপিল প্রক্রিয়ায় আছেন, তারা চাইলে স্বেচ্ছায় দেশে ফিরে যেতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে তাদের দেওয়া হবে জনপ্রতি ১ হাজার ৫০০ ইউরো এবং একটি পরিবারকে সর্বোচ্চ ৬ হাজার ইউরো।

তবে শর্ত অনুযায়ী, শুধুমাত্র ২০২৪ সালের ২৮ সেপ্টেম্বরের আগে যারা আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছেন, তারাই এ সুবিধা পাবেন। এরপর আবেদনকারীরা এই কর্মসূচির আওতায় আসবেন না। একইসাথে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যদি কোনো দেশে ফেরার পর ব্যক্তির জীবন ঝুঁকির মুখে পড়ে, তবে তাকে ফেরত পাঠানো হবে না।

মন্ত্রী জিম ও’ক্যালাহান বলেন,

“আমাদের আন্তর্জাতিক সুরক্ষা ব্যবস্থার ওপর চাপ কমাতে হবে। অনেক আবেদনকারীর মামলার ফল ইতিবাচক হয় না। তাই তাদের দ্রুত নিজ দেশে ফেরানো জরুরি।”

কেন এ কর্মসূচি

আয়ারল্যান্ড সরকার জানায়, ক্রমবর্ধমান আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা সামাল দিতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কেবল চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ২০০ জন অভিবাসী স্বেচ্ছায় দেশে ফিরে গেছেন। গত বছর একই সময়ে এ সংখ্যা ছিল মাত্র ৫৫০।

আগে তাদের টিকিটের খরচ বহন করতো ডাবলিন সরকার এবং জনপ্রতি ১ হাজার ২০০ ইউরো ও পরিবারপ্রতি ২ হাজার ইউরো দিত। এবার সেই সহায়তার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।

আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা ক্রমবর্ধমান

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ২০২২ সালে আয়ারল্যান্ডে আশ্রয়ের আবেদন জমা পড়ে ১১ হাজার ৫৯৮টি। ২০২৩ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৩ হাজার ২৬৪-এ। আর ২০২৪ সালে সংখ্যা লাফিয়ে বেড়ে হয় ১৮ হাজার ৬৫১, যা দেশটির জন্য রেকর্ড।

মন্ত্রিসভার সদস্য কোলম ব্রফি বলেন,

“এই কর্মসূচির মাধ্যমে অভিবাসীরা মর্যাদার সঙ্গে নিজ দেশে ফিরতে পারবেন এবং সেখানে নতুনভাবে স্থায়ী হতে আর্থিক সহায়তাও পাবেন।”

No comments

Powered by Blogger.