চার দেশের নেতার সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক: দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে নতুন দিগন্ত — প্রেস সচিব
চার দেশের নেতার সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক: দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে নতুন দিগন্ত — প্রেস সচিব
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে ইতালি, পাকিস্তান, ফিনল্যান্ড ও কসোভোর সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেছেন। এসব বৈঠকের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চার দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
নিউইয়র্কে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শফিকুল আলম বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা সফরের তৃতীয় দিনে চার বিশ্বনেতার সঙ্গে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন। প্রতিটি বৈঠকই ছিল ফলপ্রসূ, যা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করেছে।”
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে অনুষ্ঠিত এসব বৈঠকের মধ্যে ছিল—
- পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বৈঠক,
- যুক্তরাষ্ট্রের একটি হোটেলে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে বৈঠক,
- ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাবের সঙ্গে আলোচনা,
- কসোভোর প্রেসিডেন্ট ভজোস্যা ওসমানির সঙ্গে সাক্ষাৎ।
প্রেস সচিব জানান, প্রতিটি বৈঠকেই বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গ উঠে আসে। ইতালির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় ড. ইউনূস দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণের প্রস্তাব দিলে তিনি “ইতালি-বাংলাদেশ বিজনেস ফোরাম” গঠনের উদ্যোগের কথা জানান।
কসোভো প্রসঙ্গে শফিকুল আলম বলেন, “দেশটি ছোট হলেও সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপের দ্রুততম বর্ধনশীল অর্থনীতির অন্যতম হয়ে উঠেছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত অবস্থা থেকে উঠে এসে গত দুই বছরে তারা অসাধারণ অগ্রগতি করেছে।”
ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট নানা বিষয় আলোচনা হয়। ফিনল্যান্ড ও ইতালি উভয় দেশই বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে। ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সফরের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন বলেও প্রেস সচিব জানান।
চারটি বৈঠকেই রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা হয়। ইতালির প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দেন, ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিতব্য রোহিঙ্গাবিষয়ক সম্মেলনে ইতালি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল পাঠাবে। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক অর্থায়ন কীভাবে বাড়ানো যায়, সেটিও বৈঠকের আলোচনায় উঠে আসে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে বৈঠকে ড. ইউনূস সাম্প্রতিক বন্যায় প্রাণহানির ঘটনায় সমবেদনা জানান এবং দুই দেশের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা করেন।
এ ছাড়া ড. ইউনূস যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ এক্সিকিউটিভ বিজনেস রাউন্ডটেবিলে “অ্যাডভান্সিং রিফর্ম, রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড গ্রোথ” শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। সেখানে তিনি মেটলাইফ, শেভরন ও এক্সেলেরেট এনার্জির মতো শীর্ষ মার্কিন কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগের আহ্বান জানান।


No comments