বিসিবি নির্বাচন: ক্রিকেট শাটডাউন ঘোষণা
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচনের পর থেকেই উত্তেজনার ইঙ্গিত মিলছিল। মঙ্গলবার সেই উত্তাপ বাড়ে, আর বুধবার তা রূপ নেয় ঝড়ে। রাজধানীর লেকশোর হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ক্লাব অর্গানাইজার অ্যাসোসিয়েশন দেশের সব লিগ, বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের ক্রিকেট কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দেয়। এক কথায়—এটি বাংলাদেশের ক্রিকেটে আনুষ্ঠানিক ‘শাটডাউন’ ঘোষণা।
সংকটের সূত্রপাত হয় কাউন্সিলরশিপ নিয়োগে এনএসসির (ন্যাশনাল স্পোর্টস কাউন্সিল) হস্তক্ষেপ নিয়ে। তৃতীয় বিভাগ থেকে বাছাই পেরোনো ১৫টি ক্লাবের কাউন্সিলরশিপ স্থগিত করে এনএসসি। এর প্রতিবাদে তামিম ইকবালসহ ১৬ জন প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। পরে ১৫টি ক্লাবের কাউন্সিলরশিপ ফিরিয়ে দেওয়া হলেও তামিম আর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফেরেননি।
সংবাদ সম্মেলনে তামিম বলেন,
১৫টা ক্লাব থাকুক বা না থাকুক, আমি যদি নির্বাচনে দাঁড়াতাম, ভোট পেতাম—এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ ছিল না। কিন্তু আমার অবস্থান ছিল একটি স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করা। যারা জয়ী হয়েছেন, তাঁরা নিজেদের সিদ্ধান্তে অংশ নিয়েছেন—তাতে আমাদের অভিযোগ নেই। তবে ভবিষ্যতে যেন আজকের অবস্থান পরিবর্তন না হয়, সেটাই অনুরোধ।
বিসিবি পরিচালক পদ থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা মেজর (অব.) ইমরোজ আহমেদ অভিযোগ করে বলেন,
আমাদের কেউ রাজনৈতিক রঙে রাঙাতে চাইছেন। কেউ বলছেন আমরা বিএনপি, কেউ বলছেন আওয়ামী লীগ। কিন্তু আমাদের পরিচয় একটাই—আমরা ক্রিকেট সংগঠক।
আরও কঠোর অবস্থান নেন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের কাউন্সিলর মাসুদুজ্জামান।
তিনি বলেন, আমরা বহু সরকার ও বিতর্কিত নির্বাচন দেখেছি, কিন্তু এমন নির্বাচনী প্রহসন আগে কখনো দেখিনি। সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিই ছিল আমাদের একমাত্র কথা। কিন্তু যেহেতু আমাদের প্রয়োজন নেই, আমরা ক্রিকেট কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি ঘোষণা দেন,
তৃতীয় বিভাগ থেকে শুরু করে প্রিমিয়ার লিগ পর্যন্ত সব লিগে আমরা অংশ নেব না। জেলা পর্যায়েও খেলা বন্ধ থাকবে। কাউকে হুমকি দেওয়া হলে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করব। আজ থেকেই ক্রিকেট বন্ধ।
আরো পড়ুন : বিসিবি নির্বাচনে পরিচালক পদে বিজয়ীরা
অক্টোবরের শেষ দিক থেকেই এই বর্জনের কার্যক্রম শুরু হতে পারে তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেট দিয়ে। পরিস্থিতি যদি দীর্ঘায়িত হয়, তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট এক অনিশ্চিত অন্ধকারে নিমজ্জিত হতে পারে—এমন সতর্কবার্তা দিচ্ছেন সংগঠকরা ও বিশ্লেষকেরা।
এক সময় মাঠে আলো ছড়ানো খেলা এখন প্রশাসনিক দ্বন্দ্বে ঢেকে যাচ্ছে—বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের এই অস্থিরতা কত দূর যাবে, এখন সেটাই বড় প্রশ্ন।


No comments