জাপানে এক লাখ দক্ষ কর্মী নেওয়ার অগ্রগতি জানাল এনবিসিসি প্রতিনিধি দল

জাপানে এক লাখ দক্ষ কর্মী নেওয়ার অগ্রগতি জানাল এনবিসিসি প্রতিনিধি দল, প্রধান উপদেষ্টা, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, প্রবাসী শ্রমিক, জাপান, দক্ষ কর্মী,

বাংলাদেশ থেকে এক লাখ দক্ষ কর্মী নেওয়ার অগ্রগতি জানাতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে জাপানের ব্যবসায়িক ফেডারেশন ‘ন্যাশনাল বিজনেস সাপোর্ট কম্বাইন্ড কো-অপারেটিভস’ (এনবিসিসি)।

রোববার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ২৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। এ সময় প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি-বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

৬৫টিরও বেশি জাপানি কোম্পানির সমন্বয়ে গঠিত এই ফেডারেশন সম্প্রতি বাংলাদেশের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওআই) সই করেছে, যার মাধ্যমে আগামী পাঁচ বছরে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন ট্রেনিং প্রোগ্রাম (টিআইটিপি) ও স্পেসিফাইড স্কিলড ওয়ার্কার্স (এসএসডব্লিউও) কর্মসূচির আওতায় এক লাখেরও বেশি বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে।

প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জানান, প্রথম ধাপে আগামী বছর দুই হাজার দক্ষ কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হবে। ২০২৭ সালে ছয় হাজার এবং ২০২৮ সালে ১৮ হাজার কর্মী নেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে। এর মধ্যে নির্মাণ, সেবা, অ্যাভিয়েশন, গার্মেন্টস ও কৃষি খাতে সবচেয়ে বেশি কর্মীর প্রয়োজন হবে। ভবিষ্যতে গাড়িচালক, অটোমোবাইল ও রিসাইক্লিং খাতেও কর্মী চাহিদা বাড়বে বলে জানান তারা।

বাংলাদেশ থেকে কর্মী প্রেরণের লক্ষ্যে খুলনা ও গাজীপুরের কাপাসিয়ায় দুটি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে সম্ভাব্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এনবিসিসি প্রতিনিধিরা ইতোমধ্যে ওই কেন্দ্র দুটি পরিদর্শন করেছেন। প্রধান উপদেষ্টা সেখানে প্রশিক্ষণের মান নিয়ে জানতে চান।

এনবিসিসি চেয়ারম্যান মিকিও কেসাগায়ামা বলেন, “গত মার্চে আমি কেন্দ্র দুটি পরিদর্শন করেছিলাম। এবার এসে দেখছি সাত মাসের মধ্যেই উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। আমরা প্রশিক্ষণে অত্যন্ত সন্তুষ্ট এবং আশা করছি, আগামী বছরই দুই হাজার কর্মী নিয়োগ দিতে পারব।” তবে তিনি বলেন, প্রশিক্ষকদের ভাষাগত দক্ষতা আরও উন্নত করা গেলে কার্যক্রম আরও সফল হবে।

ভাষা শেখার চ্যালেঞ্জের প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “জাপান থেকে শিক্ষক এনে বা অনলাইনে ভার্চুয়াল ক্লাসের মাধ্যমে ভাষা প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে।”

বাংলাদেশি নারীদের সক্ষমতার প্রশংসা করে তিনি বলেন, “কেয়ারগিভিং সেক্টরে বাংলাদেশের নারীরা অসাধারণ। ভাষা ও প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ পেলে তারা জাপানের এই খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।”

তিনি আরও বলেন, “একবার সুযোগ পেলে বাংলাদেশের মেয়েরা দ্রুত শিখে নিতে পারে এবং অন্যদেরও শেখাতে সক্ষম। শুরুটা হলেই আরও অনেকে আগ্রহী হবে।

আরো পড়ুন: Japan to establish school in Bangladesh to hire skilled transport drivers

প্রতিনিধিরা জানান, আগামী কয়েক বছরে জাপানে চার লাখের বেশি দক্ষ নার্সের প্রয়োজন হবে, এবং তারা বাংলাদেশ থেকে আরও নার্স নেওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন।

বৈঠকে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, “জাপানে কর্মী প্রেরণের অগ্রগতি নিয়মিতভাবে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করা হবে।” তিনি আরও জানান, মন্ত্রণালয়ে জাপানে কর্মী প্রেরণ-সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে বিশেষ সেল গঠন করা হয়েছে।

আরো পড়ুন: গাজায় নতুন সহিংসতা, যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক তৎপরতা তীব্রতর

No comments

Powered by Blogger.