জীবনের কষ্টে ধৈর্যের মর্যাদা – কুরআনের আলোকে
মানুষের জীবনে সুখ–দুঃখ, সাফল্য–ব্যর্থতা, আনন্দ–বেদনা অবিচ্ছেদ্য অংশ। কখনো জীবনের পথ সহজ হয়, আবার কখনো কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়তে হয়। এসব পরীক্ষার সময় ধৈর্য ধারণ করা একজন মুমিনের সবচেয়ে বড় গুণ। কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা বারবার ধৈর্যশীলদের মর্যাদা ও পুরস্কারের কথা স্মরণ করিয়েছেন।
আল্লাহ বলেন:
— (সূরা আল-বাকারা, আয়াত ১৫৫)
এই আয়াতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে—জীবনের কষ্ট, দুঃখ ও পরীক্ষাগুলো আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি পরীক্ষা, যার মাধ্যমে প্রকৃত বিশ্বাসী মানুষকে যাচাই করা হয়। যে ব্যক্তি এসব পরীক্ষায় ধৈর্য ধারণ করে, সে আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হয়।
আরো পড়ুন...শুধু কোরআন কিচ্ছু না, শুভঙ্করের ফাঁকি’ বিতর্কিত মন্তব্যে ফয়জুল করিমকে লিগ্যাল নোটিশ
ধৈর্য মানে কী?
ধৈর্য মানে কী?
ধৈর্য মানে শুধু চুপ থাকা নয়; বরং তা হলো আল্লাহর ফয়সালায় সন্তুষ্ট থাকা, অন্যায় বা কষ্টের মুহূর্তে হতাশ না হওয়া এবং আল্লাহর রহমতের প্রতি পূর্ণ ভরসা রাখা।
কুরআনে আরও বলা হয়েছে:
“নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।”
— (সূরা আল-বাকারা, আয়াত ১৫৩)
অর্থাৎ, যে ব্যক্তি বিপদের সময়ও ঈমান অটুট রাখে, তার পাশে থাকেন আল্লাহ নিজেই। ধৈর্যশীলদের জন্য শুধু পার্থিব জীবনে নয়, পরকালের জন্যও রয়েছে অনন্ত পুরস্কার।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“যে ধৈর্য ধারণ করতে চায়, আল্লাহ তাকে ধৈর্য দান করেন। ধৈর্যের চেয়ে উত্তম ও প্রশস্ত দান আর কিছু নেই।” — (সহিহ বুখারি)
সুতরাং, জীবনের প্রতিটি বিপদে একজন মুসলমানের কর্তব্য হলো ধৈর্যের পরিচয় দেওয়া, আল্লাহর প্রতি আস্থা রাখা এবং বিশ্বাস করা যে প্রতিটি কষ্টই একটি শিক্ষা ও উন্নতির সুযোগ।
উপসংহার:
ধৈর্য শুধু কষ্ট সহ্য করার শক্তি নয়; এটি আল্লাহর নিকট পৌঁছার সেতুবন্ধন। কুরআনের আলোকে বোঝা যায়—যারা ধৈর্য ধরে, আল্লাহ তাদের কখনো বৃথা যেতে দেন না। পরীক্ষার পরেই আসে প্রশান্তি, অন্ধকারের পরই উদিত হয় আলোর ভোর। তাই জীবনের প্রতিটি কষ্টেই মুমিনের উচিত বলা—
“ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন”
অর্থাৎ, “আমরা আল্লাহর জন্যই, এবং তাঁরই দিকে ফিরে যাব।”
.png)

No comments