মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হতে পারেন শেখ হাসিনা

মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হতে পারেন শেখ হাসিনা, ব্রেকিং নিউজ, আজকের খবর, ভাইরাল নিউজ,সর্বশেষ সংবাদ, বাংলাদেশ খবর,

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হতে পারেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।

৭৮ বছর বয়সী শেখ হাসিনা বর্তমানে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন রয়েছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, গত বছরের সরকারবিরোধী আন্দোলনের সময় তিনি নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করার নির্দেশ দেন, যার ফলে প্রায় ১ হাজার ৪০০ মানুষ নিহত হন। জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয়ের প্রতিবেদনে এই সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবী ময়নুল করিম বলেন, “আমাদের কাছে অডিও, ভিডিও, ফোন রেকর্ডসহ একাধিক প্রমাণ রয়েছে, যা স্পষ্টভাবে শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততা প্রমাণ করে। তাই তার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত।”

আরেক প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম আদালতে বলেন, “তিনি ১ হাজার ৪০০ মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী।”

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা নিহতদের মরদেহ পুড়িয়ে ফেলার এবং আহতদের চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

গত বছরের জুলাইয়ে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া ছাত্র আন্দোলন দ্রুতই শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে রূপ নেয়। ৫ আগস্ট তিনি হেলিকপ্টারে দেশত্যাগ করেন। ওইদিন ঢাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত ৫২ জন নিহত হন, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ ঘটনা হিসেবে বিবেচিত।

রাষ্ট্রপক্ষের দাবি, শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। অন্যদিকে সাবেক পুলিশপ্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন যে শেখ হাসিনার নির্দেশেই বিক্ষোভ দমন অভিযানে হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করা হয়।

এছাড়া শেখ হাসিনার সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বণ্টনের প্রস্তাবও আদালতে তোলা হয়েছে। বর্তমানে তিনি আদালত অবমাননার দায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এবং একটি দুর্নীতি মামলারও আসামি।

রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী শেখ হাসিনার পক্ষে বলেন, “নিরাপত্তা বাহিনী আত্মরক্ষার্থে গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছিল, কারণ পরিস্থিতি তখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল।”

এদিকে শেখ হাসিনার ভাগনি ও যুক্তরাজ্যের এমপি টিউলিপ সিদ্দিক এই বিচার প্রক্রিয়াকে “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত” বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনিও এক মামলায় অভিযুক্ত হলেও বর্তমানে বাংলাদেশে নেই।

আদালতে শেখ হাসিনার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন আগামী রোববার শুরু হয়ে আগামী সপ্তাহে শেষ হওয়ার কথা। চূড়ান্ত রায় নভেম্বরের মধ্যেই ঘোষণা হতে পারে।

বাংলাদেশে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। চলমান নিষেধাজ্ঞার কারণে আওয়ামী লীগ ওই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না বলে নির্বাচনী বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

সূত্র: দ্য টেলিগ্রাফ

আরো পড়ুন: জুলাই সনদ স্বাক্ষর নতুন অধ্যায়ের সূচনা : মির্জা ফখরুল

No comments

Powered by Blogger.