গীবত ও পরনিন্দা থেকে বাঁচার সহজ পন্থা

গীবত ও পরনিন্দা থেকে বাঁচার সহজ পন্থা সত্যবাদিতার বরকত ইসলাম আমাদের কী শেখায়, পরনিন্দা, মিথ্যা ও অহংকার  তিনটি নীরব বিষ, ইসলামে ভালো চরিত্র গঠনের ৫টি উপায়,গীবত ও পরনিন্দা ,


গীবত ও পরনিন্দা এমন দুইটি নৈতিক ব্যাধি, যা অজান্তেই আমাদের ঈমান ও আখলাক নষ্ট করে দেয়। কেউ অনুপস্থিত থাকাকালে তার দোষ-ত্রুটি আলোচনা করা বা অপমানকরভাবে তুলে ধরা ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। কুরআনে গীবতকে মৃত ভাইয়ের মাংস ভক্ষণ করার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে — যা থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় এটি কত বড় গুনাহ। কিন্তু দুঃখজনকভাবে অধিকাংশ মানুষ জানেই না কখন সে গীবতে লিপ্ত হচ্ছে। তাই সচেতনতা ও আত্মসংযমই হতে পারে এ থেকে বাঁচার প্রধান উপায়।

প্রথমত, অভ্যাসকে চিহ্নিত করা জরুরি। আমরা কীভাবে, কোন পরিবেশে বা কার সঙ্গে বেশি গীবত করতে যাই — তা খেয়াল করলে সমস্যা সমাধানের অর্ধেক পথ পার হওয়া যায়। যেমন অনেকেই আড্ডা, পারিবারিক গেট-টুগেদার বা অফিস আলোচনায় অজান্তেই অন্যের চরিত্র বিচার করতে শুরু করেন। তাই নিজেকে থামানোর মনোজাগতিক প্রস্তুতি আগে থেকেই রাখা দরকার।

দ্বितীয়ত, নিজেকে প্রশ্ন করুন — আমি যা বলছি, তা কি ওই ব্যক্তির সামনে বলা যেত? যদি উত্তর না হয়, তবে এটি গীবত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এই ছোট যাচাই পদ্ধতিটি এক প্রকার সুরক্ষা ঢাল হিসেবে কাজ করে।

তৃতীয়ত, বিষয় পরিবর্তনের শিল্প শেখা। অনেক সময় আমরা গীবত করতে চাই না, কিন্তু অন্যেরা শুরু করে দেয়। এ সময় বিনীতভাবে প্রসঙ্গ বদলে দেওয়া বা ইসলামি প্রজ্ঞার আলোকে বিষয়টি সুন্দরভাবে থামিয়ে দেওয়া সুবুদ্ধির কাজ। যেমন বলা যেতে পারে — “আসুন, অন্য কিছু আলোচনা করি”, অথবা “এই বিষয়গুলো আখেরাতের জন্য নিরাপদ নয়।”

চতুর্থত, আল্লাহর ভয় হৃদয়ে জাগ্রত রাখা। যে ব্যক্তি জানে, আল্লাহ তার প্রতিটি শব্দ নথিভুক্ত করছেন — তার জিহ্বা সহজে গীবতে লিপ্ত হয় না। প্রতিদিন রাতে নিজের কথাবার্তার হিসাব নেওয়াও অত্যন্ত ফলপ্রসূ।


পঞ্চমত, ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি অনুশীলন। মানুষের ভুল নিয়ে কথা বলার বদলে তার ভালো দিক প্রচার করা অভ্যাস করলে গীবতের প্রবণতা স্বাভাবিকভাবেই কমে যায়। প্রশংসা ও ইতিবাচক আলোচনা হৃদয়কে পরিশুদ্ধ করে এবং মানুষের মাঝে ভালোবাসা বাড়ায়।

সবশেষে, যদি অনিচ্ছায় গীবত হয়ে যায়, সঙ্গে সঙ্গে তওবা করা ও আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া জরুরি। পাশাপাশি সেই ব্যক্তির জন্য কল্যাণের দোয়া করা অত্যন্ত উত্তম আমল।

  মনে রাখতে হবে — একটি জিহ্বাই মানুষকে জান্নাতেও নিতে পারে, আবার জাহান্নামেও ফেলতে পারে। তাই গীবত ও পরনিন্দামুক্ত সুন্দর জীবন গড়তে আজ থেকেই সচেতনতা শুরু হোক।

মেয়েদের জন্য পায়ে মেহেদি লাগানোর বিধান কী?


 

No comments

Powered by Blogger.