নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ নিরাপত্তা : সিইসি নাসির উদ্দিন
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ. এম. এম. নাসির উদ্দিন বলেছেন, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই হবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কোনো কেন্দ্রে সামান্যতম সমস্যা বা অনিয়ম দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেওয়া হবে।
শনিবার (১১ অক্টোবর) চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত ‘নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনে চ্যালেঞ্জ নিরূপণ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সিইসি বলেন, ভোটের দিন মাঠপর্যায়ে আইন ও প্রশাসনিক ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের হাতে পূর্ণ দায়িত্ব ও ক্ষমতা দেওয়া হবে, যাতে তারা পরিস্থিতি অনুযায়ী তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে—ভোটগ্রহণের দায়িত্বে থাকবেন বিভিন্ন শ্রেণী–পেশার মানুষ, বিশেষ করে শিক্ষকরা। তাই প্রশিক্ষণ এমনভাবে দিতে হবে, যাতে তারা সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন।
সিইসি নাসির উদ্দিন জানান, জাতীয় নির্বাচনে নির্বিঘ্ন কার্যক্রম নিশ্চিতে একটি ‘ইমার্জেন্সি সেল’ গঠন করা হবে। এই সেল মাঠপর্যায়ে পাওয়া অভিযোগ বা অনিয়মের ঘটনায় দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, ইসি সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে. এম. আলী নেওয়াজ, বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দিন, ডিআইজি (চট্টগ্রাম রেঞ্জ) মো. আহসান হাবীব পলাশ এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি আনোয়ারুল হক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রামের সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বসির আহমেদ।
ইসির রোডম্যাপ অনুযায়ী আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমভাগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। চট্টগ্রামে এ নিয়ে প্রস্তুতি চলছে জোরেশোরে। ইতোমধ্যে ১৬টি সংসদীয় আসনের সীমানা চূড়ান্ত হয়েছে।
প্রকাশিত খসড়া অনুযায়ী এবার চট্টগ্রামে ভোটকেন্দ্র কমেছে ৬৪টি এবং বুথ কমেছে ১ হাজার ৭৬টি। এখন মোট কেন্দ্র ১ হাজার ৯৫৯টি ও বুথ ১২ হাজার ৬৫৬টি—এর মধ্যে পুরুষ বুথ ৫ হাজার ৭৬৪টি এবং মহিলা বুথ ৬ হাজার ৮৯২টি।
আরো পড়ুন: সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিতে কঠোর অবস্থানে ইসি: সিইসি নাসির উদ্দিন
চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিস জানিয়েছে, ১৪ হাজার ৬১৫টি ব্যালট বাক্সের প্রয়োজন হলেও বর্তমানে মজুত আছে ১৫ হাজার ৯৪৪টি—অর্থাৎ প্রয়োজনের চেয়েও বেশি।
ভোটগ্রহণের জন্য প্রায় ৪৪ হাজার কর্মকর্তা নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে—যার মধ্যে ১ হাজার ৯৫৯ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ১২ হাজার ৬৫৬ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং ২৫ হাজার ৩১২ জন পোলিং অফিসার থাকবেন। অতিরিক্ত ১০ শতাংশ কর্মকর্তার নামও রিজার্ভ থাকবে, যাতে প্রয়োজনে বিকল্প নিয়োগ দেওয়া যায়।
চট্টগ্রামের সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. বশির আহমেদ বলেন, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের তালিকাও জমা পড়েছে।
আরো পড়ুন: উপদেষ্টাদের সেফ এক্সিট নয় : আইন উপদেষ্টা
সর্বশেষ হালনাগাদ ভোটার তালিকা অনুযায়ী চট্টগ্রামে নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৪ হাজার ২৮৩ জন। ফলে মোট ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৬ লাখ ৬৮ হাজার ৫১৮ জন—এর মধ্যে পুরুষ ৩৪ লাখ ৪৮ হাজার ৫৪৮ জন এবং মহিলা ৩২ লাখ ১৯ হাজার ৯১৭ জন।


No comments