টঙ্গীতে কেমিক্যাল গুদামে আগুন, দ্বগ্ধ দুই ফায়ার কর্মীর অবস্থা আশঙ্কাজনক

 

টঙ্গীতে কেমিক্যাল গুদামে আগুন, দ্বগ্ধ দুই ফায়ার কর্মীর অবস্থা আশঙ্কাজনক

টঙ্গীতে কেমিক্যাল গুদামে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ড, দুই ফায়ার ফাইটার ১০০ শতাংশ দগ্ধ

গাজীপুরের টঙ্গীতে একটি রাসায়নিক গুদামে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডে ফায়ার সার্ভিসের চার কর্মীসহ অন্তত আটজন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে দুজন ফায়ার ফাইটার ১০০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছেন, যাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুর ৩টা ১৫ মিনিটের দিকে গুদামে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট তিন ঘণ্টার চেষ্টায় সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর উদ্ধার অভিযানে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে যৌথ বাহিনীর সদস্যরাও অংশ নেন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মামুন বলেন, “আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে, তবে আমরা এখনও ভেতরে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছি। আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।”

আহত ও দগ্ধদের পরিচয়:

দগ্ধদের মধ্যে রয়েছেন:

  • জান্নাতুল নাঈম (৪৩), ফায়ার সার্ভিস পরিদর্শক – ৪২% দগ্ধ

  • মো. শামীম (৪৫), ফায়ার ফাইটার – ১০০% দগ্ধ

  • মো. নুরুল হুদা (৪৫), ফায়ার ফাইটার – ১০০% দগ্ধ

  • মো. জয় হাসান (২৫), ফায়ার ফাইটার – ৫% দগ্ধ

এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. শাহিন (৪২) আহত হয়েছেন, তবে তিনি দগ্ধ নন। আহত কারখানা কর্মকর্তার পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ঘটনায় পথচারী বাবু হাওলাদার (২০) ও আশিক (১৭) আহত হয়ে টঙ্গী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

চিকিৎসা ও বর্তমান অবস্থা:

দগ্ধদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। ইনস্টিটিউটের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. ফজলে রাব্বি জানান, আহতদের মধ্যে জয় হাসানের অবস্থা অপেক্ষাকৃত ভালো, তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হবে।

ফায়ার সার্ভিস ডিজির বক্তব্য:

সোমবার রাতে হাসপাতালে আহত ফায়ার ফাইটারদের দেখতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল বলেন, “আমাদের চারজন ফায়ার সার্ভিস কর্মী আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুজনের শরীর ১০০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তারা সবাই পিপিই (Personal Protective Equipment) পরা অবস্থায় ছিলেন। কিন্তু আগুনের তাপমাত্রা এতটাই বেশি ছিল যে পিপিও পুড়ে গেছে।”

তিনি আরও বলেন, “একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, বিস্ফোরণের পর ফায়ার ফাইটাররা দগ্ধ অবস্থায় বেরিয়ে আসছেন। পিপির তাপ সহনশীলতা ৩০০ থেকে ৩২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলেও সেই তাপমাত্রাও সহ্য করতে পারেনি। আমাদের ফায়ার ফাইটাররা অন্যের জীবন ও সম্পদ বাঁচাতে গিয়ে এই ভয়াবহ দুঘটনার শিকার হয়েছেন। আমরা সর্বাত্মকভাবে তাদের পাশে থাকবো।”



No comments

Powered by Blogger.