ধর্ষণ ও গণপিটুনিতে নিহতের সংখ্যা বেড়েছে সেপ্টেম্বরে: এমএসএফ

 

মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)

সেপ্টেম্বরে দেশে গণপিটুনি, ধর্ষণ ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা বেড়েছে—এমন তথ্য প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংগঠন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)। মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিবেদনে সংগঠনটি বলেছে, সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর ও নিজস্ব অনুসন্ধানের ভিত্তিতে তারা এই পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন তৈরি করেছে।

গণপিটুনির ঘটনা বাড়ছে

প্রতিবেদন অনুযায়ী, গণপিটুনিতে নিহতের সংখ্যা আগস্টের ২৩ থেকে সেপ্টেম্বরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ জনে। এমএসএফ বলছে, এ ধরনের ‘আইন হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা’ বিচারহীনতা ও মানবিক মূল্যবোধের মারাত্মক সংকটকে সামনে নিয়ে এসেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক ঘটনার উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, চুরির সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হয়ে পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় চার দিন পর এক যুবকের মৃত্যু ঘটে। এতে প্রমাণ হয়, সহিংসতা শুধু তাৎক্ষণিক নয়, এর প্রভাব রাষ্ট্রীয় হেফাজতেও গড়ায়।

সংগঠনের প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ সাইদুর রহমান বলেন, “মব সন্ত্রাসের বিপরীতে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা ও উদাসীনতা চরমে পৌঁছেছে। কিছু ক্ষেত্রে সরকারের উসকানিও পরিলক্ষিত হয়েছে।”

নারী ও সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা

প্রতিবেদনে দেখা যায়, সেপ্টেম্বরে ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে হয়েছে ৫৩টি, যা আগস্টে ছিল ৪৭। এর মধ্যে ১৩টি ছিল দলবেঁধে ধর্ষণ এবং ৩টি ধর্ষণের পর হত্যা। পাশাপাশি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। সেপ্টেম্বরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে ২৯টি, যেখানে আগস্টে কোনো ঘটনা ছিল না।

এ ছাড়া মাজার ও আখড়ায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ১৬টি; জাতিগত সংখ্যালঘুদের ১২টি ঘরবাড়ি ভাঙচুর বা অগ্নিসংযোগের শিকার হয়েছে। খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভরত তিনজন আদিবাসী যুবককে গুলি করে হত্যার ঘটনাও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এমএসএফের দাবি

সংগঠনটির মতে, গণপিটুনিসহ সব ধরনের সহিংসতা রোধে দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করা জরুরি। একই সঙ্গে হেফাজতে মৃত্যু, ধর্ষণ এবং সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও অপরাধীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে এমএসএফ।

No comments

Powered by Blogger.