মনোনয়ন বৈঠকে ডাক পেয়ে চমক তৈরি করলেন খুলনার নজরুল ইসলাম মঞ্জু
দীর্ঘদিন ধরে খুলনা বিএনপির রাজনীতির পরিচিত মুখ নজরুল ইসলাম মঞ্জু। দলটির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জড়িত এই নেতা প্রায় তিন দশক নগর বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। ছিলেন খুলনা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদকও। তবে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে তাকে কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি ও সাংগঠনিক পদ থেকে বাদ দেওয়া হয়। এরপর থেকে তার অনুসারীদেরও ধীরে ধীরে বিভিন্ন ইউনিট কমিটি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
তবুও দমে যাননি মঞ্জু। কোনো পদে না থেকেও তিনি খুলনায় কেন্দ্রীয় ঘোষিত প্রতিটি কর্মসূচি নিজস্ব অনুসারীদের নিয়ে পালন করেছেন। চার বছর পর সেই নিষ্ঠারই ফল মিলেছে—সোমবার (২৭ অক্টোবর) গুলশানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের বৈঠকে ডাক পেয়েছেন তিনি। এ খবরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে মঞ্জুর সমর্থকদের মধ্যে।
১৯৭৯ সালে ছাত্রদল থেকে রাজনীতিতে পথচলা শুরু করেন নজরুল ইসলাম মঞ্জু। ১৯৮৭ সালে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হন, এরপর ১৭ বছর সাধারণ সম্পাদক এবং ২০০৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। খুলনা বিএনপির রাজনীতি ও মঞ্জুর নাম প্রায় সমার্থক হয়ে গিয়েছিল। তবে তার বিরুদ্ধে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগও উঠেছিল প্রতিপক্ষের কাছ থেকে।
২০২১ সালের ডিসেম্বরেই শুরু হয় তার রাজনৈতিক অধ্যায়ের বড় ধাক্কা। ৯ ডিসেম্বর ঘোষিত তিন সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি থেকে বাদ পড়েন মঞ্জু ও তার ঘনিষ্ঠরা। এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করলে ১৪ ডিসেম্বর তাকে শোকজ করা হয় এবং ২৫ ডিসেম্বর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়।
পদ হারানোর পর কিছুদিন নিরব থাকলেও পরে আবার সক্রিয় হন মঞ্জু ও তার অনুসারীরা। কেন্দ্রীয় প্রতিটি বড় কর্মসূচিতে তারা আলাদা ব্যানারে অংশ নিতে শুরু করেন। জাতীয় দিবসগুলোও তারা আলাদাভাবে পালন করেন।
খুলনা মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম বলেন, “মানুষ চায় মঞ্জুর মতো যোগ্য ও অভিজ্ঞ নেতা দলকে নেতৃত্ব দিক, কিংবা সংসদে তাদের প্রতিনিধিত্ব করুক।”
নিজের প্রতিক্রিয়ায় নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, “আমি কখনো দলের বাইরে যাইনি বা বিশ্বাসঘাতকতা করিনি। কোনো পদ ছাড়াই খুলনার নেতাকর্মীরা আমার সঙ্গে থেকে প্রতিটি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। তারা সত্যিকারের ত্যাগী কর্মী।”
আরো পড়ুন: ছাত্রদল দোষ স্বীকার করে রাজনীতি করে : রাকিব
মনোনয়নপ্রত্যাশীদের বৈঠকে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এই ডাক খুলনা বিএনপিতে নতুন প্রাণ সঞ্চার করেছে। আমি আগের মতোই দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিতে প্রস্তুত আছি।”
আরো পড়ুন: আগামী নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের চূড়ান্ত সংখ্যা জানালো ইসি


No comments