সেনাবাহিনীকে রাখতে হবে সব বিতর্কের ঊর্ধ্বে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক তিন মামলায় অভিযুক্ত ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে ঢাকার সেনানিবাসের সাবজেলে নেওয়া হয়েছে। গতকাল সকাল ১০টার দিকে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণ থেকে প্রিজন ভ্যানে করে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর কবির।
অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ১৫ সেনাসদস্যকে ঢাকা সেনানিবাসের যে সাবজেলে রাখা হয়েছে, সেখানে এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আদালত নিশ্চয়ই আটক সেনাসদস্যদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবেন। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, একজন অভিযুক্ত ব্যক্তি যতক্ষণ না উপযুক্ত আদালত কর্তৃক দোষী প্রমাণিত হবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত তাঁকে নির্দোষ বলে বিবেচনা করতে হবে। সবাই আশা করে বিচার শেষ হওয়ার আগে তাঁদের নিয়ে মন্তব্য করা থেকে সবাই বিরত থাকবেন।
বিচার প্রভাবিত করতে পারে—এমন কোনো পদক্ষেপ যেন কেউ না নেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এটি কয়েকজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মাত্র। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি প্রতিষ্ঠান; ব্যক্তির অভিযোগের দায় কোনোভাবেই পুরো প্রতিষ্ঠানের ওপর বর্তায় না।
আমরা লক্ষ করেছি, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব সেনাসদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ার পর কিছুসংখ্যক অতিউৎসাহী ব্যক্তি সমগ্র সেনাবাহিনী সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করছেন। অনেকেই সেনাবাহিনী সম্পর্কে না জেনে নানানরকম কল্পকাহিনি বলছেন সমাজমাধ্যমে।
আমাদের মনে রাখতে হবে, আমাদের সেনাবাহিনী এ দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক। আমাদের স্বাধীনতার রক্ষক। মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমাদের সেনাবাহিনী গড়ে উঠেছে।
আমাদের মনে রাখতে হবে, আমাদের সেনাবাহিনী এ দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক। আমাদের স্বাধীনতার রক্ষক। মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমাদের সেনাবাহিনী গড়ে উঠেছে।
বাংলাদেশের প্রতিটি সংকটে সেনাবাহিনী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের সেনাবাহিনী বিশ্বের যে কোনো দেশের সশস্ত্র বাহিনী থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। এ দেশের সেনাবাহিনী জনবিচ্ছিন্ন নয়, বরং জনবান্ধব। জনগণের অধিকার রক্ষায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগে, শান্তি প্রতিষ্ঠায় সেনাবাহিনী সব সময় মানুষের পাশে থেকে কাজ করেছে। দেশের যে কোনো বিপর্যয়ে সেনাবাহিনী তথা সশস্ত্র বাহিনী অসাধারণ ভূমিকা পালন করে বাংলাদেশকে চরম বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করেছে। ঐতিহ্যগতভাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সব সময় জনগণের সঙ্গেই একাত্ম থাকে।
জুলাই বিপ্লবের সময়ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জনগণের পক্ষে অবস্থান নেয়। জনগণের বিজয় নিশ্চিত হয় সেনাবাহিনীর হাত ধরেই। সেনাবাহিনী আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর গুলির নির্দেশ না দিয়ে জন-আকাঙ্ক্ষার প্রতি সম্মান দেখিয়েছিল। এভাবে সেনাবাহিনী জনতার পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ঢাকার রাজপথে ছাত্র-জনতা যেভাবে সেনাসদস্যদের প্রতি ভালোবাসা, সম্মান দেখিয়েছে এবং একাত্ম করে নিয়েছে তা অভূতপূর্ব।
সেনাবাহিনী তথা সশস্ত্র বাহিনী গণ অভ্যুত্থান-পরবর্তী প্রায়-নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে অনেক সংকট ও সমস্যা সমাধানে সরকারকে ব্যাপকভাবে সাহায্য করছে। বিশেষত সরকার গঠনের প্রথম দিকে বাংলাদেশ পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার সময় দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এবং করছে। দেশে ও বিদেশে এ সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। ডাকাতি, জুডিশিয়াল ক্যু, আনসার বিদ্রোহ, গার্মেন্ট শ্রমিকদের নৈরাজ্যমূলক কর্মকাণ্ড দমনে এবং সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে সেনাবাহিনী অসাধারণ ভূমিকা পালন করেছে। আগস্টে ফেনী-কুমিল্লা অঞ্চলে বন্যাদুর্গত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল সশস্ত্র বাহিনী।
অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ৬ অক্টোবর সেনাসদর নির্বাচনি পর্ষদ ২০২৪-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের সময় বলেন, ‘ছাত্র-জনতার জুলাই বিপ্লবের পর সেনাবাহিনী জনগণের আস্থার প্রতীক হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘দেশের ক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এবং একটি অন্তর্র্বর্তী সরকার গঠনের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে দেশকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির হাত থেকে রক্ষা করেছে।
জুলাই বিপ্লবের সময়ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জনগণের পক্ষে অবস্থান নেয়। জনগণের বিজয় নিশ্চিত হয় সেনাবাহিনীর হাত ধরেই। সেনাবাহিনী আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর গুলির নির্দেশ না দিয়ে জন-আকাঙ্ক্ষার প্রতি সম্মান দেখিয়েছিল। এভাবে সেনাবাহিনী জনতার পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ঢাকার রাজপথে ছাত্র-জনতা যেভাবে সেনাসদস্যদের প্রতি ভালোবাসা, সম্মান দেখিয়েছে এবং একাত্ম করে নিয়েছে তা অভূতপূর্ব।
সেনাবাহিনী তথা সশস্ত্র বাহিনী গণ অভ্যুত্থান-পরবর্তী প্রায়-নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে অনেক সংকট ও সমস্যা সমাধানে সরকারকে ব্যাপকভাবে সাহায্য করছে। বিশেষত সরকার গঠনের প্রথম দিকে বাংলাদেশ পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার সময় দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এবং করছে। দেশে ও বিদেশে এ সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। ডাকাতি, জুডিশিয়াল ক্যু, আনসার বিদ্রোহ, গার্মেন্ট শ্রমিকদের নৈরাজ্যমূলক কর্মকাণ্ড দমনে এবং সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে সেনাবাহিনী অসাধারণ ভূমিকা পালন করেছে। আগস্টে ফেনী-কুমিল্লা অঞ্চলে বন্যাদুর্গত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল সশস্ত্র বাহিনী।
অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ৬ অক্টোবর সেনাসদর নির্বাচনি পর্ষদ ২০২৪-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের সময় বলেন, ‘ছাত্র-জনতার জুলাই বিপ্লবের পর সেনাবাহিনী জনগণের আস্থার প্রতীক হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘দেশের ক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এবং একটি অন্তর্র্বর্তী সরকার গঠনের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে দেশকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির হাত থেকে রক্ষা করেছে।
সামনে নির্বাচন—অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণে সেনাবাহিনীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান আইনশৃঙ্খলার বাস্তবতা বিবেচনায় সেনাবাহিনীর সক্রিয় অংশগ্রহণ না থাকলে শান্তিপূর্ণ ভোট নেয়া কল্পনাযোগ্য নয়—এটিই সাধারণ মানুষের গভীর আশ্বাস। তাই দুর্ভাবনা এড়াতে কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তিকে সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার চেষ্টা না করার কথা ভাবা উচিত; এই নীতিই বিএনপি বারবার জোর দিয়ে বলছে এবং প্রধান উপদেষ্টাকে প্রতিরক্ষা বাহিনীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে। (সালাহউদ্দিন আহমদের বক্তব্য অনুসারে “রাষ্ট্রকে ব্যালান্সড অবস্থায় রাখতে হবে; আমরা কোনো ঝুঁকি গ্রহণ করতে চাই না।” ) রাজনৈতিক ও সামাজিক পর্যায়ে সেনাবাহিনী-সরকারের মধ্যে নতুন কোনো টানাপোড়েন তৈরি হলে তা নির্বাচনকে অনিশ্চিত করবে—অতএব অভিযুক্তদের আইনানুগ বিচার নিশ্চিত করলেই ক্ষতি থাকবে না, পাশাপাশি সেনাবাহিনী নিয়ে দুশ্চক্রতা বা গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকা দরকার যাতে ফেব্রুয়ারিতে ভোটের মাধ্যমে গঠিত গণতন্ত্রে কোনো ব্যাঘাত না ঘটে।


No comments