পুজোয় কোন দিনে কী পরবেন, ভেবেছেন?
এগিয়ে আসছে শারদীয় দুর্গাপূজা। এটি শুধু উৎসব কিংবা পার্বণ নয়। শারদোৎসব হলো বাঙালির আবেগের উদযাপনও। দুর্গাপূজার প্রতিটি দিনের নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। অষ্টমীতে কুমারী পূজা, নবমীতে ধুনুচি নাচ, দশমীতে বিসর্জনের আগে সিদুঁরখেলা আরও কত কী! পুজোর পাঁচদিন রাজধানীজুড়ে থাকে নানা আয়োজন। মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে ঠাকুর দেখা উৎসবের একটি বড় অনুষঙ্গ। কোন দিন কোন বেলা কী পোশাক পরবেন ভেবেছেন কিছু? আপনার ভাবনায় সমর্থন যোগাতে এই বিশেষ ফিচার-
ষষ্ঠী পুজোর শুরুর দিন। এদিন সাজপোশাকে একটু সাদাসিধে ভাব থাকে। এবারের পুজোয় কিশোরীদের অন্যতম পছন্দ কো-অর্ড কিংবা কুর্তি-লেগিংস। সাথে হালকা মেকআপ আর লিপস্টিক। এইদিন ছেলেরা আরামদায়ক যেকোনও টিশার্ট, শর্ট পাঞ্জাবি পরতে পারেন জিন্স কিংবা ঢিলেঢালা ট্রাউজার্সের সঙ্গে। আর তরুণীরা হালকা সুতি লিলেন-এর শাড়িতে আভিজাত্য ফুটিয়ে তুলতে পারেন।
সপ্তমী
এদিন পুজোর দ্বিতীয় দিন। এদিন থেকেই মূলত উৎসব জমে ওঠে। সপ্তমীর সাজে সমসাময়িক ট্রেন্ডি ও মার্জিত পোশাক পরার চল আছে। অনেকেই পুজোর পাঁচ দিন শাড়ি পরেন। এদিন একটু জমকালো পোশাক পরাই যায়। এদিন সন্ধ্যায় ঘুরতে বেরোনোর সময় সিল্ক পরতে পারেন। এটা আরামদায়ক, দেখতেও বেশ জমকালো। তবে শাড়ি পরতে না চাইলে সপ্তমীর সন্ধে রঙ্গিন হতে পারে লং স্কার্ট বা প্রিন্টেড লেহেঙ্গা দিয়ে। আর স্কার্ট আর লেহেঙ্গার সাথে মানানসই অলঙ্কার পরতে হবে। খুব ভারী কিছু পরা যাবে না। সাথে হিল না পরে চটি পরলে বেশ সুন্দর দেখায়। সপ্তমীতে ছেলেরা সাজতে পারেন একরঙা পাঞ্জাবিতে। কেননা পরের দুদিন একটু বেশি জমকালো পরতে হবে।
পুজোর সময় পাঞ্জাবির সঙ্গে কোলাপুরি স্যান্ডেল পরলে একটু অন্যরকম ফ্যাশনেবল করে তোলে।
অষ্টমী
অষ্টমী পুজোর মাঝামাঝি হওয়ার এদিন আয়োজনটা খুব জাঁকজমকপূর্ণ হয়। অষ্টমীর সাজগোজ নিয়ে সকলেরই আলাদা পরিকল্পনা থাকে। অষ্টমীর সকালে অঞ্জলিতে অনেকেই বেশি কারুকাজ করা পোশাক পছন্দ করেন না। ছিমছাম সাজেরই চল বেশি। অষ্টমীর দিন শেষে মধ্য রাত পর্যন্ত ঘুরে বেড়ানো, মেলায় নানা কিছু খাওয়া দাওয়া তো আছেই। সকালের সাজ যদি হয় সাদামাটা স্নিগ্ধ, রাতের সাজপোশাকে থাকুক গাঢ় রঙের ছোঁয়া। এদিন তরুণীরা রঙ্গিন অরগ্যাঞ্জার পোশাক পরতে পারেন।
এ ছাড়া হাকোবা শাড়িও এখন বেশ ট্রেন্ডে রয়েছে। মানানসই ব্লাউজ এবং গয়নায় সাজলে আলাদা দেখাবে। অষ্টমীর দিন অনেকেই সাবেকি শাড়ি পরতে ভালোবাসেন। এছাড়া জামদানি, কাঞ্জিভরম মানিয়ে যাবে এইদিন রাতের সঙ্গে। ছেলেরা এইদিন ধুতি-পাঞ্জাবি পরবেন কিনা ভেবে দেখতে পারেন। বেশ সাবেকি একটা ভাব আসে আবার স্মার্টও লাগে। পাঞ্জাবির ক্ষেত্রে কাজ করা সিল্কের হলে ভালো মানাবে।
নবমী
পুজোর শেষ লগ্ন এইদিন থাকে বলে সকাল থেকেই একটা মন খারাপ শেষ শেষ ভাব শুরু হয়ে যায়। তাই বলে সাজগোজের কমতি থাকবে কেন। আসছে বছর আবার হবে এই আনন্দ নিয়ে সেজে ফেলুন। পুজোর পাঁচদিনের মধ্যে নবমী হলো সব থেকে জমকালো। নবমীতে কিশোরীরাও শখ করে শাড়ি পরতে চায়। এইদিনের জন্য ট্রেন্ডি নেটের শাড়ি, একটু বয়স্করা গাদোয়াল পরতে পারেন। শাড়ি না পরতে চাইলে কিশোরীরা সিল্কের আনারকলি পরতে পারেন। আর ছেলেরা হাল ফ্যাশনের শেরওয়ানি। তাদের জন্য সবদিনই রঙবেরঙের সিল্কের পাঞ্জাবিও খুব ভালো।
মায়ের বিদায়বেলা
দশমী মানেই ঠাকুর এদিন চলে যাবে। যাওয়ার আগে সিঁদুরখেলা হবে। এইদিন সকাল সকাল লাল পাড় সাদা শাড়ি পরে মণ্ডপে যাওয়ার রীতি আছে। লাল শাড়ির সঙ্গে ফুলস্লিভড নানা ডিজাইনের ব্লাউজ পরতে পারেন। সাথে হালকা সোনার কানের দুল, চুলে সাদা ফুল। ছেলেরা এই শেষ বেলায় সুতির ঢিলেঢালা পাঞ্জাবি আর সাদা পায়জামা চটি দিয়ে পরতে পারেন।


No comments